আগামীকাল মঙ্গলবার এএফসি কাপে প্লে-অফ পর্বে আবাহনী লিমিটেডের মুখোমুখি হবে এটিকে মোহনবাগান। এএফসি কাপ ২০২২-এর গ্রুপ ‘ডি’ তে পৌঁছাতে জয়ের বিকল্প নেই কারো সামনেই। তাইতো এপার বাংলা থেকে ওপার বাংলা, কেউ কাউকে এক চুলও ছাড় দিতে রাজি নয়। তবে নিজেদের চেনা মাঠ, পরিচিত দর্শকদের সামনে একঝাঁক তারকাখচিত দল নিয়ে আবাহনীকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত সবুজ-মেরুন। অপরদিকে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে খেলার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না আকাশী-নীলরাও। তাইতো কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে দুই বাংলার দুই ক্লাবের এক ধ্রুপদী লড়াইয়েরই আভাস মিলছে।
শক্তিমত্তায় কিছুটা পিছিয়ে থাকার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলা হওয়া সত্বেও আত্মবিশ্বাসী আবাহনী কোচ মারিও লেমোস। প্লে-অফ ম্যাচের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে প্রতিরোধ গড়ে জেতার দিকে আগ্রহ লেমোসের, “এমনিতে সবকিছু ঠিক আছে। আমরা খেলার জন্য তৈরি। এটা চ্যালেঞ্জ বলতে পারেন। মোহনবাগান ভালো দল। আমার মনে হয়, আমাদের জিততে হলে সেরাটা খেলতে হবে।”
ঘরোয়া ফুটবলে এ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপের শিরোপা দুটোই ঘরে তুলেছে ঢাকা আবাহনী। প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলেও শেখ জামালকে পেছনে ফেলে দুইয়ে উঠে এসেছে আকাশী নীলরা। ১১ ম্যাচ শেষে ২২ পয়েন্ট লেমোসের দলের। এএফসি কাপের প্লে অফে গেল সপ্তাহে মালদ্বীপের ক্লাব ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়েছে ম্যাচটি। অর্থনৈতিক কারণে আসেনি ভ্যালেন্সিয়া, ওয়াকওভার পেয়ে প্লে অফে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের ৬ বারের চ্যাম্পিয়নরা। অপরদিকে প্রতিপক্ষ মোহনবাগান শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ক্লাব ব্লু স্টারকে ৫-০ গোলে হারিয়ে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। দুদলের এর আগেও ২০১৭ সালে এএফসি কাপে দেখা হয়েছিল। সেবার মোহনবাগানের কাছে হোম ম্যাচে ড্র এবং অ্যাওয়ে ম্যাচে হারের তিক্ততা পেয়েছিল আবাহনী। এবার আর সে ভুল করতে চায় না মারিও লেমোসের শিষ্যরা। মোহনবাগানকে হারিয়ে মূল পর্ব নিশ্চিতের লক্ষ্য আবাহনীর।
কিন্তু আবাহনীকে ছাড় দিতে নারাজ এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো। আবাহনী সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা না থাকলেও অনলাইন মাধ্যম থেকে ধারণা নিয়ে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে উত্তীর্ণ হওয়ার দিকে নজর এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচের, “ইউটিউবে ভিডিও দেখে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে কিছুটা আন্দাজ পেয়েছি। এ ছাড়া আর সে ভাবে কোনও ধারণা নেই। এটা আমাদের কাছে একটা সমস্যা। কারণ অচেনা দল ভয়ঙ্কর হয়। আইএসএলে বিপক্ষের ম্যাচ দেখে নামার সুবিধা ছিল। ব্লু স্টারেরও একটা ম্যাচ দেখেছিলাম। কিন্তু আবাহনীর ম্যাচ এখনও দেখিনি। শুনেছি ওদের দল শক্তিশালী।”
কলকাতার ঐতিহ্যবাহী বিবেকানন্দ যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গন প্রস্তুত হয়ে আছে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী ও মোহনবাগানের লড়াই উপহার দিতে। কলকাতার দর্শকরাও মুখিয়ে আছে দুই বাংলার ফুটবলযুদ্ধ গ্যালারিতে বসে দেখার। তাইতো ম্যাচটি এখন আর দুই ক্লাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। হয়ে গেছে বাংলাদেশ ও ভারতের ফুটবল শক্তির পরীক্ষাও। দেখা যাক দুই বাংলার দুই ক্লাবের লড়াইয়ে কাকে কে হারিয়ে এএফসি কাপের গ্রুপ ‘ডি’-তে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করতে পারে।