রাজশাহীতে যখন বাংলাদেশ পুলিশ এফসির বিপক্ষে গোল উৎসবে মেতে উঠেছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব সেখানে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে গোল মিসের মহড়া দিয়ে গিয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। তাইতো দুই মাঠ থেকে ফলাফলটাও এসেছে ভিন্ন। বাংলাদেশ পুলিশ এফসির জালে ৬ গোল দিয়ে যখন সাইফ মাঠ ছেড়েছে পূর্ন ৩ পয়েন্ট নিয়ে, সেখানে মোহামেডানের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে শেখ রাসেল মাঠ ছেড়েছে ১ পয়েন্ট এবং সাথে গোল মিসের হতাশা সঙ্গী করে!
প্রথম লেগে বাজে পারফরম্যান্সের পর দলে ব্যাপক পরিবর্তন আনা শেখ রাসেলের লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় লেগে ঘুরে দাঁড়ানো। সে লক্ষ্যে তাদের প্রথম বাঁধা ছিল ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। মোহামেডানের বিপক্ষে অবশ্য শুরু থেকেই দাপট দেখায় জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুর শেখ রাসেল। ম্যাচের ২১তম মিনিটে দলে নতুন যোগ দেওয়া আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার চার্লস দিদিয়েরের থ্রু বল অবি মনেকের দু পায়ের ফাঁক গলে চলে যায় বক্সে থাকা ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ জুয়েলের কাছে। সুযোগসন্ধানী জুয়েল সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় বল পাঠান মোহামেডানের জালে। শুরুতেই লিড নেওয়া শেখ রাসেল যেভাবে ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করেছিল সেখানে প্রথমার্ধেই ব্যাবধান বাড়ানোর সুযোগ ছিল তাদের সামনে। কিন্তু বারবার গোল মিসের মহড়া দেওয়ায় আর ব্যাবধান বাড়ানো হয়নি।
প্রথমার্ধের ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়ার পর, বিরতি থেকে ফিরেও একই অবস্থা শেখ রাসেলের। মাঝে মোহামেডানের আক্রমনগুলোও দেখেনি আলোর মুখ। কিন্তু ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে অপেক্ষা করছিল নাটকীয়তা। ৮০তম মিনিটে মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ১০ জনের মোহামেডানের বিপক্ষে যেখানে ছড়ি ঘোরানোর কথা শেখ রাসেলের, সেখানে ৮৮তম মিনিটে সবাইকে স্তব্ধ করে মোহামেডানকে ম্যাচে ফেরান জাফর ইকবাল। অবি মনেকের অ্যাসিস্টে গোল করে মূল্যবান ১ পয়েন্ট ছিনিয়ে নেন এই ফরোয়ার্ড।
অপরদিকে রাজশাহীতে পুলিশের জালে গোল উৎসব করেছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। দুই অর্ধে সমান ৩ টি করে গোল করে হোম ম্যাচে পুলিশকে আধ ডজন গোলের লজ্জায় ফেলে সাইফ। প্রথমার্ধে ২৫তম মিনিটে এমফন ওদোহ, ৩১তম মিনিটে এমেকা উগবুগ এবং ৩৯তম মিনিটে আসরোর গাফুরভের গোলে ৩ গোলের লিড নেয় আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির সাইফ। বিরতিতে যাওয়ার আগে অবশ্য আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার ম্যাক্সিমিন জাওয়ার গোলে ব্যাবধান কমায় পুলিশ।
বিরতির পর আবারো পুলিশের ওপর চড়াও হয় সাইফ। ৬৯তম মিনিটে আবারো স্কোর শিটে নাম তুলেন উজবেক মিডফিল্ডার আসরোর গাফুরভ। এতো এতো গোলের ভিড়ে যখন দেশিদের গোল করার অপূর্ণতা ছিল, সেখানে সেই অপূর্ণতা দুর করেন সাইফের দুই তরুণ ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিম এবং সাজ্জাদ হোসেন। ৭৮তম মিনিটে ফাহিম এবং ৮২তম মিনিটে গোল করেন সাজ্জাদ। ফলে ৬-১ গোলের বড় জয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ১২দশ রাউন্ড শেষ করে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।