করোনায় পুরো ফুটবল বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়ে। তবে আস্তে আস্তে এর প্রভাব কমায় অনেক দেশেই শুরু হয়েছে স্থগিত লীগ। কিন্তু বাংলাদেশে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে লীগ ও স্বাধীনতা কাপ পরিত্যক্ত ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। মাঠে খেলা না থাকায় ফুটবলাররা হতাশ। এই সময়টা অনেকেরই যেন কাটতে চাইছে না। ঘরে বসেই ফিটনেস ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে ফুটবলাররা। কিন্তু এই বন্ধই আশীর্বাদ হয়ে এসেছে কিছু ফুটবলারের জন্য। দীর্ঘ দিন ইনজুরির কারণে মাঠে বাইরে থাকা মাসুক মিয়া জনি ও আতিকুর রহমান ফাহাদ এই সময়টায় নিজেদের ফিট করে নিয়েছেন। মাঠে ফিরতে তারা এখন মুখিয়ে আছেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের আগে তাজিকিস্তান জাতীয় দলের অনুশীলনে বড় ধরনের চোট পান জনি। বসুন্ধরা কিংস সতীর্থ ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষের সঙ্গে সংঘর্ষে লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় তাঁর। সেই থেকে মাঠের বাইরে আছেন জেমি ডের আস্থাভাজন এ ফুটবলার। ঢাকায় তাঁর অস্ত্রোপচারের সব খরচ বহন করছে বসুন্ধরা কিংস। তবে পরবর্তীতে ফিফা থেকেও আর্থিক সহায়তায় পান তিনি। এই মৌসুমের শুরু থেকেই নিজেকে আবার মাঠে ফেরানোর জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছেন জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার। ইনজুরির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে অফসাইডকে জনি জানান,`আমি এখন শতভাগ ফিট। এককভাবে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি। দু তিনটা প্র্যাকটিস ম্যাচ খেললে ও দলীও ট্রেনিং করলে বুঝতে পারবো কোথাও কোন সমস্যা আছে কিনা।’
মাঠের ফিরতে উন্মুখ হয়ে আছেন মাসুক মিয়া জনি। ২০১৮-১৯ মৌসুমে দেশের মিডফিল্ডারদের মধ্যে অন্যতম সেরা পারফর্ম্যান্স ছিলো তার। বসুন্ধরাকে প্রত্যাশিত ট্রফিগুলো জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। করোনার ফলে মাঠে খেলা না থাকায় অন্তত খেলতে না পারার আক্ষেপটা কমেছে তার। মাঠে ফিরতে উন্মুখ জনি বলেন, ‘করোনা আমার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। করোনার কারনে আমি নিজেকে ফিট করার দীর্ঘ সময় পেয়েছি। এখনো ক্যাম্প শুরু হতে এক-দেড় মাস সময় লাগবে। তাতে করে আমি আরো ফিট করতে পারবো নিজেকে। সামনে আমাদের এএফসি কাপ ও বিশ্বকাপ বাছাই রয়েছে। আমি মাঠে ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’
২০১৮ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে আহত হয়েছিলেন মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ। এরপর একবার ফিরলেও গতবছর এএফসি কাপে ম্যাচে আবারো ইনজুরির কারণে মাঠে বাইরে চলে যেতে হয় তাকে। ইনজুরি থাকা অবস্থায়ই দেশের অন্যতম সেরা এই মিডফিল্ডারকে দলে নেয় বসুন্ধরা কিংস। তারাই ফাহাদের চিকিৎসা খরচ বহন করেছে। জাতীয় দলের হয়ে ইনজুরিতে থাকাকালীন এক লাখ টাকার বেশি ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল ফিফা।
বসুন্ধরা কিংসের হয়ে কিছু ম্যাচে মাঠে নামলেও তখন পুরোপুরি সেড়ে উঠতে পারেননি ফাহাদ। তবে করোনার এই সময়ে নিজেকে পুরোপরি ফিট করে নিয়েছেন বলে বিশ্বাস তার। তার ইনজুরির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে অফসাইডকে ফাহাদ বলেন, ‘আমি শত ভাগ ফিট।মাঠে ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। করোনা না থাকলে আমি খেলায় ফিরতে পারতাম।করোনার কারনে অপেক্ষা বাড়লো। আশাকরি এএফসি কাপ ও বিশ্বকাপ বাছাই দিয়ে মাঠে ফিরতে পারবো ইনশাআল্লাহ্।’
ইনজুরির তালিকায় থাকা ফুটবলারদের মধ্যে আরেকটি বড় নাম মতিন মিয়া। গত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালের শুরুতেই ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর আস্তে আস্তে ফিট হয়ে উঠেন তিনি। বর্তমান অবস্থা নিয়ে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সামনে তাকে জাতীয় দল ও ক্লাব উভয়ের খেলায় পাওয়া যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।