আজ সোমবার (১৩ মার্চ) এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী ফুটবলের এক নতুন পথচলা শুরু হয়েছে। গেল বছর নেপাল থেকে সিনিয়র সাফের শিরোপা নিয়ে দেশে ফেরা মেয়েদের ফুটবল উন্নয়নে বেশ কয়েকটি আশ্বাস দিয়েছিল বাফুফে। এর মধ্যে একটি ছিল মেয়েদের বর্তমানের তুলনায় আরো বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। এবার মেয়েরা পাচ্ছে সে সুযোগ। এশিয়ায় প্রথমবারের মতো নারীদের নিয়ে ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কে স্পোর্টসের সহায়তায় এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাফুফে।
চলতি বছরের মে মাসে প্রথম নারী ফ্রাঞ্চাইজি লিগ অনুষ্ঠিত হবে। এই লিগের আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ওমেন্স সুপার লিগ’। ছয়টি দলের লিগে ১৯ বা ২৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। দুই ভেন্যুর পরিকল্পনা থাকলেও সিলেটকেই মূলত প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। কারণ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এখনো সংস্কারাধীন। প্রতি দলে পাঁচ জন করে বিদেশি খেলোয়াড় খেলানোর সুযোগ থাকবে। বিদেশি ফুটবলারের মধ্যেও রয়েছেন বিভাজন। দক্ষিণ এশিয়ান ব্যতীত অন্য যে কোনো দেশের তিন জন ফুটবলার নিবন্ধন করাতে পারবে দলগুলো। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে দুই জন নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে। সাবিনা, কৃষ্ণাদেরও বিভিন্ন ক্যাটাগরি করা হবে। এ, বি ও সি তিন ক্যাটাগরিতে যথাক্রমে তিন, তিন ও চার জন করে খেলোয়াড় থাকবেন। ক্যাটাগরির বাইরে প্রতি দল দুই জন করে ফুটবলার নিতে পারবে।
আজ শুধু লিগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসেছে। লিগের বাকি বিষয়ে বাফুফে কাজ করবে। এ বিষয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেন,
‘মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারপারসন কিরণ আপার নেতৃত্বে একটি আলাদা কমিটি হবে। সেই কমিটি সামনে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের ছাড়পত্র, স্টেডিয়াম ফ্যাসিলিটিজ, ফ্রাঞ্চাইজি চূড়ান্তকরণ সহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করবে।’
কে স্পোর্টস দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নানাক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। নারী ফুটবলে ফ্রাঞ্চাইজি লিগের উদ্যোগ নেয়ার কারণ সম্পর্কে ফাহাদ বলেন,
‘নারীরা ফুটবলকে বিশেষ উচ্চতায় নিয়েছে। এমন একটি আয়োজনের এটাই উত্তম সময়।’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন,
‘কে স্পোর্টসের সিইও এবং মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান দুই জনই আমার কাছে এই ব্যাপারে আলাপ করেছিলেন। দুইটি কারণে আমি এই লিগটি ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। মেয়েরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে এবং আরো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে।’
সাফ চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক সাবিনা খাতুনও উন্মুখ এই লিগের জন্য,
‘আমরা সবাই অধীর আগ্রহে রয়েছি এই লিগ নিয়ে। শুধু আমাদের ফুটবলাররারই নন, ইতোমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অনেকেই জেনেছে। তারাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’
আজ রাজধানীর অভিজাত হোটেল লা মেরিডিয়ানে দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই পুরো এশিয়ার প্রথম নারী ফ্রাঞ্চাইজি লিগের লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে বাফুফের কর্তা ব্যক্তিরা, স্পন্সর প্রতিষ্ঠান কে স্পোর্টসের কর্মকর্তাগণ এবং দেশের বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য অভিনেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।