অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে গত ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। এই ঘটনার পর ফেডারেশন থেকেও আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় সোহাগকে। তবে সর্বোচ্চ ক্রীড়া আদালত কোর্ট অব অরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আপিল করেছেন সোহাগ।
নিষিদ্ধের ঘটনার পর এতদিন ধরে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনো কথা বলেননি। তবে ঘটনার প্রায় ১ মাস পর মুখ খুলেছেন বাফুফের নিষিদ্ধ এই সাধারণ সম্পাদক। বুধবার (১০ মে) বিকেলে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন আবু নাঈম সোহাগ। এ সময় সোহাগের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসিও তার সাথে ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সোহাগ বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ক্রীড়া আদালতে আপিল করেছি। এখানে শুনানি কবে হবে তা আমরা এখনো জানি না। এটা একটা দীর্ঘ পক্রিয়া। ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যেতে পারে রায় আসতে। তবে আমরা মক্কেল আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভুল প্রমান করতে পারার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’
এ সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সোহাগ আরো বলেন, ‘সময় সব কিছুর উত্তর দিয়ে দিবে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সব ডকুমেন্টস নিয়ে প্রস্তুত আছি। কোর্ট অব স্পোর্টস আব্রিট্রেশনে (সিএএস) আপিল করছি। সেখানেই সব কিছু প্রমাণ হবে। আমি বিশ্বাস করি, এই অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে এসে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করতে পারবো।’
সোহাগের আইনজীবী আজমালুল আন্তর্জাতিক আইনে বেশ অভিজ্ঞ। ক্রীড়া আইনও বেশ ভালো ভাবেই জানা আছে তার। বাফুফের এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এছাড়াও ক্রীড়াঙ্গনের বেশ কিছু ফেডারেশনের এথিক্স কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ফিফার সিদ্ধান্তকে ভুল বলেছেন এই প্রবীন আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘২০১৭-২০ সাল পর্যন্ত বাফুফের ক্রয় কমিটি ও নীতিমালা ছিল না। ফিফার নির্দেশেই সকল কিছু হয়েছে। ফলে তাদের প্রদত্ত সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।’
নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করায় জুরিখে মামলা পরিচালনা করতে হবে সোহাগের। যা বেশ ব্যয় বহুল। অর্থের সংস্থান নিয়ে প্রশ্নে তার আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি ডিসকাউন্ট দিয়েছেন। তবে জুরিখের বিষয়য়ে তিনি অবগত নন। বাফুফেও সোহাগকে আইনি সহায়তা না দিয়ে উল্টো বহিষ্কার করেছে। বিষয়টি নিয়ে বাফুফের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘(নির্দোষ প্রমাণ করতে) আমাকেই লড়তে হবে। বাফুফে দায়িত্ব নিলেই কী আর না নিলেই কী। আমি চাইলেও বাফুফেতে থাকতে পারতাম না। অনেক কিছুই আপনারা বোঝেন। আমি কিছু বলব না।’