দীর্ঘ একযুগেরও বেশী সময় পর সাফের সেমিফাইনালে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। কারো দয়াদাক্ষিণ্যে নয়,বীরের মতো লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনেছে,করেছে অসাধ্য সাধন। আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল উদ্যমের পারদ এখন আকাশচুম্বী। আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া সাফের নকআউট পর্বে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ কুয়েত বেশ শক্তিশালী। লাল-সবুজের দল থেকে র্যাংকিংয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে পশ্চিম এশিয়ার নীল তরঙ্গরা। এবারের সাফে অতিথি হিসেব অংশ নেওয়া দলটি নিজেদের আধিপত্য দেখিয়েছে গ্রুপ পর্বে,হয়েছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। তাদের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামা মুখের কথা নয়।
প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলেও নিজের শিষ্যদের নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ দলের কোচ হ্যাভিয়ার কাবররা। আশাবাদী হবেই না কেনো, শেষ দুই ম্যাচে যে দামাল ছেলেরা পিছিয়ে পড়েও জয় এনে দিয়েছে তাদের প্রতি বাধ্য তাদের শিক্ষকও। তাই তো ফাইনালকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে রেখেছেন কোচ নিজেই। তিনি বলেন,
‘অবশ্যই সেমিফাইনাল আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল। এখন সেটা পূরণ হয়েছে, তাই আগামীকাল আমরা শুধুই ম্যাচ উপভোগ করতে নামব না। আমাদের লক্ষ্য এখন ফাইনাল নিশ্চিত করা।’
প্রতিপক্ষ নিয়েও বেশ ভাবছেন কাবররা। তাদের নিয়ে খেলা বিশ্লেষণ করে নিজের পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বলেন,
‘আমরা প্রতি ম্যাচের আগেই প্রতিপক্ষ নিয়ে বিশ্লেষণ করি। আমরা জানি তারা শক্তিশালী দল। আমরা সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। আমরা যে দুই ম্যাচে জয় পেয়েছি, সে দুই ম্যাচে শুরুতে গোল হজম করেছি। এই বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চেষ্টা করব প্রথমে গোল হজম না করার।’
কোচের মতোই নিজেদের এই পারফরম্যান্সে নিয়ে খুশি জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। নিজের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। তুলনামূলক ছোট দল হয়ে টুর্ণামেন্টে অংশ নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা নিয়ে জামাল বলেন,
‘এই টুর্নামেন্টে আমরা আন্ডারডগ হয়ে এসেছিলাম। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন র্যাংকিংয়ের দল হিসেবে আমরা ছিলাম। কিন্তু সেই আমরাই এখন সেমিফাইনালে।’
দলের এই সাফল্যের পিছনের গল্পও বলেছেন জামাল। এই সাফল্যের পিছনে নিজেদের কঠোর পরিশ্রমের কথাও তুলে ধরেছেন। এই নিয়ে তিনি বলেন,
‘আমরা গত এক মাসে অনেক পরিশ্রম ও পরিকল্পনা করেছি। সৌদিতে অনুশীলন করেছি। কম্বোডিয়ায় ম্যাচ খেলেছি। কোচ অনেক পরিকল্পনা করেছেন এবং আমরা চেষ্টা করেছি।’
১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনালের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল বোদ্ধারা। ঈদের মধ্যে খোঁজ রাখছে বাংলাদেশ দলের। এতোদিন ধরে ধুকতে থাকা দলটির শত সহস্র ভক্তের এই প্রত্যাশা সম্পর্কে জামাল বলেন,
‘এটা আমাদের জন্য পজিটিভ দিক। সবাই আমাদের সাপোর্ট করছে। আমরা ফাইনাল খেলে এই সমর্থন আরো বৃদ্ধি করতে চাই। তাহলে এই উত্তেজনা আরো বাড়বে।’