ইতিহাস গড়ার পথের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনালের টিকেট পেয়েছে বেঙ্গল টাইগাররা। নিজেদের ফুটবলের এই দুর্দিনে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর সাফে সেমিফাইনালে উঠে কিছুটা ইতিহাস তৈরির পাশাপাশি স্বস্তির ছোয়াও পেয়েছে।
সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে গ্রুপ ‘এ’ এর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দল কুয়েত। অতিথি হিসেবে টুর্ণামেন্টে অংশ নিলেও রাজ্য জয়ের মতো আধিপত্য দেখিয়ে টেবিল টপার হয়েছে কুয়েত জাতীয় ফুটবল দল। বাংলাদেশের হিসেবে বেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ কুয়েত। র্যাংকিংয়ের দিক থেকে প্রায় ৫১ ধাপ এগিয়ে কুয়েত। দুইটিই এশিয়ান দল হলেও এই দুইদলের দেখা হয়েছে মাত্র একবার,তাও সেটি গতশতকে। তিন যুগেরও বেশী সময় আগে ১৯৮৬ সালের এশিয়ান গেমসে মুখোমুখি হওয়া সেই ম্যাচে কুয়েতের কাছে ৪-০ গোলে পরাজিত হয়েছিলো বাংলাদেশ।
আজ প্রায় দীর্ঘ ৩৭ বছর পর আবারো এক অন্যের বিপক্ষে ফুটবল রণে নামবে উভয় দল। কুয়েত বাংলাদেশ থেকে অনেকটাই শক্তিশালী দল, তবে নিজেদের পারফরম্যান্সের প্রতি আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। গ্রুপ পর্বে নিজেদের সাফল্য আশা বাণী শোনাচ্ছে জামালকে। এই নিয়ে তিনি বলেন,
‘আমরা জানি, এই টুর্নামেন্ট এবং এই সেমিফাইনাল আমাদের নিজেদের হাতে আছে। বাংলাদেশের মানুষ যারা ফুটবলকে সাপোর্ট করেন, তারা সবাই প্রত্যাশা করেন যে, আমরা ফাইনালে উঠবো। ইনশাআল্লাহ আমরা যদি একটা পজিটিভ রেজাল্ট করতে পারি, তাহলে ফুটবলের হাইপ আরো বাড়বে। আমরা জানি, বাংলাদেশের মানুষ ফুটবল ফলো করে। আমাদের সে দিকেও নজর রাখতে হবে।’
নিজেরা আত্মবিশ্বাসী হলেও প্রতিপক্ষকে সমীহের চোখে দেখছেন জামাল। তিনি বলেন,
‘আমরা জানি কুয়েত খুবই ভালো দল, খুবই শক্তিশালী দল। তারা অন্য গ্রুপের সেরা হয়ে সেমিফাইনাল খেলছে। তবে আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। আমরা দল হয়ে খেলবো। আমাদের কিছু খেলোয়াড় আছেন, যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে জানেন। যারা প্রতিপক্ষেকে দমিয়ে রাখতে পারেন। তাই বলবো, আমরা প্রস্তুত এই সেমিফাইনালের জন্য। আমরা ফিজিকালি কিছুটা ক্লান্ত হলেও মানসিকভাবে শতভাগ প্রস্তুত।’
জামালের মতো কোচ হ্যাভিয়ার ক্যাবররাও খেলোয়াড় প্রতি আশাবাদী। তবে গোল হজমের ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি রাখছেন কোচ। তিনি বলেন,
‘পরপর দুই ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে জিতেছি। বিষয়টি আমাদের জন্য দারুণ ছিল। মানসিকভাবে খেলোয়াড়রা শক্ত ছিল। তাই দারুণ প্রত্যাবর্তন করেছে। সেমিফাইনালে শুরু থেকেই আমরা গোল হজম না করার দিকে নজর দেবো। কারণ, আগের দুই ম্যাচে পিছিয়ে জিতলেও সব ম্যাচে সেটা নাও হতে পারে। বিশেষ করে কুয়েতের মতো দলের বিপক্ষে।’
তিনি আরো বলেন,
‘আমরা সবসময়ই প্রতিপক্ষ নিয়ে বিশ্লেষণ করি। কুয়েত অবশ্যই শক্তিশালী দল। আমরা তাদের শক্তি ও দুর্বলতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আমরা নিজেদের খেলাটা খেলতে চাই। কুয়েতকে চমকেও দিতে চাই। দলটিতে অনেক পেশাদার ফুটবল আছে। দারুণ কম্বিনেশন তাদের। কয়েকজন খেলোয়াড় আছেন যারা ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দিয়ে ম্যাচের চিত্র বদলে দিতে পারেন। সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা পরিকল্পনা তৈরি করছি।’