আবারো সেই একই রণক্ষেত্র, একই প্রতিপক্ষ, ফলাফলটাও একই। আবারো একই দেয়ালের কাছে হুমড়ি খেয়ে পড়লো ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। এএফসি কাপের বাছাইপর্বের প্লে অফ ম্যাচে ভারতীয় ক্লাব মোহনবাগানের সাথে টানা দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হয় আবাহনী। তবে ফলাফলে আসে নি কোনো ভিন্নতা। ম্যাচের শুরুতেই লিড নিলেও রীতিমতো নাস্তানাবুদ ৩-১ গোলে হেরেছে আকাশী-নীলরা।
ম্যাচের ১৭ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় ঢাকা আবাহনী। উজবেক মিডফিল্ডার মুজাফর মুজাফরভের কর্ণার কিক থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতরে বলকে প্লেস করেন দলের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ডেভিড অজুকো। সেখান থেকে মোহনবাগানের গোলরক্ষক বলকে বাহুবন্ধি করতে ভুল করলে সেই ভুলের সুযোগ নিয়ে গোল করে ফেলেন আবাহনীর ক্যারিবিয়ান মিডফিল্ডার কর্নিলিয়াস স্টুয়ার্ট।
৩২ মিনিটের মাথায় সমতায় ফিরতে পারতো মোহনবাগান। আশিষ রাইয়ের থ্রু পাস থেকে বল নিয়ে বক্সের ভেতর থেকে অন টার্গেট শট নেন কিন্তু আবাহনীর গোলরক্ষক জায়গা ছেড়ে খানিকটা এগিয়ে বলকে ঠেকিয়ে দেন। ৩৪ তম মিনিটে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসোকে ফাউল করেন আবাহনীর রক্ষণের খেলোয়াড় সুশান্ত ত্রিপুরা। ফলে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। পেনাল্টির স্পট কিক থেকে শট করে নির্ভুলভাবে গোল করে দল সমতায় ফেরান মোহনবাগানের অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড জেসন কামিন্স। আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল বলের দিকে ঝুকে পড়লেও বল আটকাতে পারেন নি।
৪২ মিনিটে কামিন্স আবারো গোলের সুযোগ পায়। তবে মাঠের বামদিক থেকে শুভাশিস বোসের ক্রস থেকে আসা বলে কামিন্স পায়ের সংযোগ যথাযথভাবে ঘটাতে না পারলে বল পার্শ্বরেখা অতিক্রম করে চলে যায়। প্রথমার্ধের ইঞ্জুরি টাইমে একেবারে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে আবাহনী। মধ্যমাঠের সামনে থেকে মুজাফরের ফ্রি কিকে হেড করে বলকে গোলমুখে রাখেন মিলাদ শেখ সোলাইমানি, হেড করা বল লুফে নিতে গিয়ে আবারো ভুল করে বসেন মোহনবাগান গোলরক্ষক এতে করে নিজের পায়ের সামনে বল পেয়ে যান আবাহনীর মিশরীয় ডিফেন্ডার মোহাম্মদ ইউসেফ। কিন্তু বলের নাগাল পাওয়ার আগেই মোহনবাগানের রক্ষণের খেলোয়াড়েরা বলকে ক্লিয়ার করে দেন। এতে করে ১-১ গোলের ড্রতে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দুইদল।
৫৮ মিনিট চলাকালে আত্মঘাতী গোলের ফাঁদে কাটা পড়ে আবাহনী। লিস্টন কোলাসোর পাস থেকে জেসন কামিন্সের এক টাচের বলকে বক্সের ভেতরে বাড়িয়ে দেন, বাড়ানো বল থেকে হুগো বুমোস সতীর্থকে লক্ষ্য করে বল রিলিজ করেন। সেই বল আটকাতে গিয়ে উল্টো নিজের জালে বল পাঠিয়ে দেন আবাহনীর মিলাদ শেখ সোলাইমানি।
২ মিনিট পর আবারো আবাহনীর জালে বল পাঠায় মোহনবাগান। লিস্টন কোলাসোর কাটব্যাক থেকে সেই গোলটি করেন মোহনবাগানের আলবেনিয়ান ফরোয়ার্ড আরলান্দো সাদিকো। ফলে ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ৩-১ গোলে। এরপর আরো বেশ কয়েকবার আবাহনীর রক্ষণ দুয়ারে আক্রমণ চালায় মোহনবাগান। কিন্তু ব্যবধান আর বাড়াতে পারে নি। ফলে ৩-১ গোলের জয় দিয়েই মাঠ ছাড়ে মোহনবাগান। এই জয়ের ফলে এএফসি কাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ফেলে ভারতীয় এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব।